স্টাফ রিপোর্টার: পাঁচ দিনেও অবস্থান নিশ্চিত করা যায়নি মাওয়ার পদ্মায় ডুবে যাওয়া
পিনাক-৬ নামে লঞ্চটির। জীবিত ফিরে পাওয়ার আশা
ছেড়ে এখন লাশের জন্য অপেক্ষার প্রহর গুনছেন নিখোঁজদের স্বজনরা। তাদের বুকফাটা আর্তনাদ ও পাঁচ দিনের অপেক্ষায় এক শোকাবহ পরিস্থিতি এখন মাওয়া-কাওড়াকান্দি এলাকায়। একের পর এক লাশ ভেসে উঠছে ভাটির বিভিন্ন নদীতে। ‘কান্ডারী-২’ এর পরে এবার লঞ্চটির খোঁজে অনুসন্ধান চালাচ্ছে জরিপ-১০। কিন্তু শুক্রবার রাত ১২টায় শেষ খবর লেখা পর্যন্ত পিনাক-৬ লঞ্চের সন্ধান মেলেনি। ফলে লঞ্চটি পাওয়ার আশা দিন দিন ক্ষীণ হয়ে আসছে।
নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান বলেছেন, মালয়েশিয়ার নিখোঁজ বিমান খুঁজতে যে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে ‘পিনাক-৬’ লঞ্চের অনুসন্ধানকাজে সেই একই প্রযুক্তি ব্যবহূত হচ্ছে। অনুসন্ধান সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা সন্তুষ্ট না হওয়া পর্যন্ত অনুসন্ধান চালিয়ে যাওয়া হবে।
পিনাক-৬-এর উদ্ধারে পরবর্তী করণীয় ঠিক করতে শুক্রবার বিকেলে মাওয়া ঘাটের অদূরে পদ্মা রেস্ট হাউসে অনুসন্ধান সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে বৈঠক করেন নৌপরিবহনমন্ত্রী। বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
সর্বাধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন যন্ত্রপাতি দিয়ে অনুসন্ধান চলছে জানিয়ে শাজাহান খান বলেন, ‘মালয়েশিয়ার হারিয়ে যাওয়া বিমান অনুসন্ধানে যে প্রযুক্তি ব্যবহার হয়েছে পিনাক-৬ উদ্ধারের জন্যও সেই প্রযুক্তি দিয়ে কাজ চলছে। আশা করি, ইতিবাচক ফল পাব।’
অনুসন্ধানে জাহাজ ‘জরিপ-১০’
পাঁচ দিনের অনুসন্ধান তত্পরতার পরও ডুবে যাওয়া লঞ্চের খোঁজে ইতিবাচক কোনো খবর জানাতে পারেননি অনুসন্ধান সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। পিনাক-৬-এর আদৌ খোঁজ পাওয়া যাবে কি না, সে রকম আশার বাণীও নেই তাঁদের কাছে। এর পরও চলছে অনুসন্ধানকাজ। নতুনভাবে শুক্রবার সকালে অনুসন্ধান বহরে যোগ হয়েছে চট্টগ্রাম থেকে আসা দেশের সর্বাধুনিক অনুসন্ধান জাহাজ ‘জরিপ-১০’।
এর আগে যুক্ত হয়েছে ‘কান্ডারী-২’। উদ্ধারকাজের সঙ্গে যুক্ত কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এই দুুটি জাহাজ মাটির নীচে ১৮ থেকে ৭০ ফুট পর্যন্ত এলাকা শনাক্ত করতে পারে।
অনুসন্ধান কাজে যুক্ত নৌবাহিনী অংশের সার্বিক তদারকির দায়িত্বে থাকা ক্যাপ্টেন নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন, শুক্রবার ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত অনুসন্ধান কাজ শেষ হয়েছে। এখন আবার এলাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে। নদীর মাঝখান দিয়ে ভাটির দিকে ১৫ থেকে ১৭ কিলোমিটার পর্যন্ত তল্লাশি করা হবে। তারপরে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে কী করা হবে।
এদিকে মাওয়া ঘাটে দীর্ঘ ৩০ বছর লঞ্চের মাস্টার ৮০ বছরের বৃদ্ধ মুজিবুর রহমানের কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তিনি জানান, ‘তিন দিন যাওয়ার পর এই লঞ্চ পাওয়ার আশা করা ঠিক না। আর কোনো দিনও হয়তো খোঁজ পাবেন না এটার।’
মুজিবুর রহমান আরও বলেন, ‘যে জায়গায় লঞ্চটি ডুবেছে তার ওপরে (পানির) যত স্রোত নিচে আরও বেশি। এই সময়ে পানির মধ্যে মাটিও থাকে প্রচুর। কোনো জায়গায় আটকে গিয়ে হয়তো বালু চাপা পড়ে গেছে।’
লৌহজং উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ওসমান গণি তালুকদার জানান, ‘লঞ্চটি ডুবার সঙ্গে সঙ্গে আমরা এলাকাবাসী একবার সিদ্ধান্ত নিয়েই ফেলেছিলাম, ইলিশ ধরার জাল দিয়েই লঞ্চটির অবস্থান নির্ণয় করব। এটা করলে হয়তো আগেই পাওয়া যেত। শনাক্তকারী জাহাজ আসতে আসতে স্রোতের কারণে লঞ্চ কই হারিয়ে গেছে কে জানে।
৪০ লাশ উদ্ধার
জেলা পুলিশ নিয়ন্ত্রণক সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার রাত আটটা পর্যন্ত নিখোঁজ ১৬৪ জনের মধ্যে বিভিন্ন জেলা থেকে ৪০টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে ১২ শিশু, ১২ পুরুষ ও ১৬ নারী রয়েছেন। এদের মধ্যে ২৩ জনের পরিচয় পাওয়ায় তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ১২ জনের লাশের পরিচয় না মিলায় তাদের শিবচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে আজ জুমার নামাজ শেষে শিবচর পৌর কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। পরিচয় পাওয়া যায়নি আরও দুটি লাশ আছে।
এসআইআর/
পিনাক-৬ নামে লঞ্চটির। জীবিত ফিরে পাওয়ার আশা
ছেড়ে এখন লাশের জন্য অপেক্ষার প্রহর গুনছেন নিখোঁজদের স্বজনরা। তাদের বুকফাটা আর্তনাদ ও পাঁচ দিনের অপেক্ষায় এক শোকাবহ পরিস্থিতি এখন মাওয়া-কাওড়াকান্দি এলাকায়। একের পর এক লাশ ভেসে উঠছে ভাটির বিভিন্ন নদীতে। ‘কান্ডারী-২’ এর পরে এবার লঞ্চটির খোঁজে অনুসন্ধান চালাচ্ছে জরিপ-১০। কিন্তু শুক্রবার রাত ১২টায় শেষ খবর লেখা পর্যন্ত পিনাক-৬ লঞ্চের সন্ধান মেলেনি। ফলে লঞ্চটি পাওয়ার আশা দিন দিন ক্ষীণ হয়ে আসছে।
নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান বলেছেন, মালয়েশিয়ার নিখোঁজ বিমান খুঁজতে যে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে ‘পিনাক-৬’ লঞ্চের অনুসন্ধানকাজে সেই একই প্রযুক্তি ব্যবহূত হচ্ছে। অনুসন্ধান সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা সন্তুষ্ট না হওয়া পর্যন্ত অনুসন্ধান চালিয়ে যাওয়া হবে।
পিনাক-৬-এর উদ্ধারে পরবর্তী করণীয় ঠিক করতে শুক্রবার বিকেলে মাওয়া ঘাটের অদূরে পদ্মা রেস্ট হাউসে অনুসন্ধান সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে বৈঠক করেন নৌপরিবহনমন্ত্রী। বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
সর্বাধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন যন্ত্রপাতি দিয়ে অনুসন্ধান চলছে জানিয়ে শাজাহান খান বলেন, ‘মালয়েশিয়ার হারিয়ে যাওয়া বিমান অনুসন্ধানে যে প্রযুক্তি ব্যবহার হয়েছে পিনাক-৬ উদ্ধারের জন্যও সেই প্রযুক্তি দিয়ে কাজ চলছে। আশা করি, ইতিবাচক ফল পাব।’
অনুসন্ধানে জাহাজ ‘জরিপ-১০’
পাঁচ দিনের অনুসন্ধান তত্পরতার পরও ডুবে যাওয়া লঞ্চের খোঁজে ইতিবাচক কোনো খবর জানাতে পারেননি অনুসন্ধান সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। পিনাক-৬-এর আদৌ খোঁজ পাওয়া যাবে কি না, সে রকম আশার বাণীও নেই তাঁদের কাছে। এর পরও চলছে অনুসন্ধানকাজ। নতুনভাবে শুক্রবার সকালে অনুসন্ধান বহরে যোগ হয়েছে চট্টগ্রাম থেকে আসা দেশের সর্বাধুনিক অনুসন্ধান জাহাজ ‘জরিপ-১০’।
এর আগে যুক্ত হয়েছে ‘কান্ডারী-২’। উদ্ধারকাজের সঙ্গে যুক্ত কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এই দুুটি জাহাজ মাটির নীচে ১৮ থেকে ৭০ ফুট পর্যন্ত এলাকা শনাক্ত করতে পারে।
অনুসন্ধান কাজে যুক্ত নৌবাহিনী অংশের সার্বিক তদারকির দায়িত্বে থাকা ক্যাপ্টেন নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন, শুক্রবার ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত অনুসন্ধান কাজ শেষ হয়েছে। এখন আবার এলাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে। নদীর মাঝখান দিয়ে ভাটির দিকে ১৫ থেকে ১৭ কিলোমিটার পর্যন্ত তল্লাশি করা হবে। তারপরে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে কী করা হবে।
এদিকে মাওয়া ঘাটে দীর্ঘ ৩০ বছর লঞ্চের মাস্টার ৮০ বছরের বৃদ্ধ মুজিবুর রহমানের কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তিনি জানান, ‘তিন দিন যাওয়ার পর এই লঞ্চ পাওয়ার আশা করা ঠিক না। আর কোনো দিনও হয়তো খোঁজ পাবেন না এটার।’
মুজিবুর রহমান আরও বলেন, ‘যে জায়গায় লঞ্চটি ডুবেছে তার ওপরে (পানির) যত স্রোত নিচে আরও বেশি। এই সময়ে পানির মধ্যে মাটিও থাকে প্রচুর। কোনো জায়গায় আটকে গিয়ে হয়তো বালু চাপা পড়ে গেছে।’
লৌহজং উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ওসমান গণি তালুকদার জানান, ‘লঞ্চটি ডুবার সঙ্গে সঙ্গে আমরা এলাকাবাসী একবার সিদ্ধান্ত নিয়েই ফেলেছিলাম, ইলিশ ধরার জাল দিয়েই লঞ্চটির অবস্থান নির্ণয় করব। এটা করলে হয়তো আগেই পাওয়া যেত। শনাক্তকারী জাহাজ আসতে আসতে স্রোতের কারণে লঞ্চ কই হারিয়ে গেছে কে জানে।
৪০ লাশ উদ্ধার
জেলা পুলিশ নিয়ন্ত্রণক সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার রাত আটটা পর্যন্ত নিখোঁজ ১৬৪ জনের মধ্যে বিভিন্ন জেলা থেকে ৪০টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে ১২ শিশু, ১২ পুরুষ ও ১৬ নারী রয়েছেন। এদের মধ্যে ২৩ জনের পরিচয় পাওয়ায় তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ১২ জনের লাশের পরিচয় না মিলায় তাদের শিবচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে আজ জুমার নামাজ শেষে শিবচর পৌর কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। পরিচয় পাওয়া যায়নি আরও দুটি লাশ আছে।
এসআইআর/